
হাঁটু ব্যথা
হাজেরা বেগম এখন দাদী। নাতী নাতনি নিয়ে তিনি ভালই কাটাচ্ছেন কিন্তু কিছু দিন যাবৎ তিনি নামাজ পরতে ও টয়লেট ব্যবহার করতে অসুবিধা বোধ করছেন কারণ উঠতে বসতে হাজেরা বেগমের হাটুতে ব্যথা হয় এবং মাঝে মাঝে ফুলে উঠে।
জাহেরা বেগম এমন একটি হাড়ক্ষয় জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন যাকে সাধারণ মানুষ হাটু ব্যথা বলে থাকে। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানে একে “অষ্টিও আথ্রাইটিস অব নি” বলা হয়। হাটু ব্যথা শুধু ক্ষয় জনিত রোগেই নয়, বিভিন্ন কারণে হাটু ব্য্যথা হতে পারে। তবে সবচেয়ে বেশি হাটু ব্যথা সাধারণত অস্থিক্ষয়ের জন্যই হয়ে থাকে। এ সমস্যা একদিনে তৈরী অস্বাভাবিক ক্রিয়া বিক্রিয়ার ফলে আস্তে আস্তে রোগের প্রতিক্রিয়া রক্ষণ পায়। এটাকে প্রাথমিক পর্যায়ে হালকা গরম হওয়া, ফুলে যাওয়া, ব্যথা হওয়া থেকে শুরু হয়ে এবং পরবর্তীতে হাটু নড়াচড়া করলে প্রচুর ব্যথা হয় রোগীর নামাজ পড়তে, পায়খানা ব্যবহার করতে এবং দৈনন্দিন কাজ করতে অসুবিধা হয়।
এছাড়া হাড় ও জোড়ার অন্যান্য রোগে, আঘাত পেলে খেলোয়ারদের খেলাধুলার সময় ভূল অবস্থানের জন্য হাটুতে আঘাত পেলে বা মচকালে অনেক সময় কোমরের অসুবিধার জন্য হাটুতে ব্যথা হতে পারে। তরুনদের তুলনায় বয়স্কদের হাটু ব্যথা বেশী হয় এবং মহিলাদের সাধারনত ৪০ বৎসরের পর ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে গেলে হরমোনের তারতম্যের জন অস্থির কণিকা ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে এব রোগ দেখা দিতে পারে।
এখন আপনাদেরকে হাটুর গঠন ও হাটু কিভাবে নিজের অবস্থান রক্ষা করে তা সমবন্ধে প্রাথমিক ধারনা দিছি, উপরের ফিমার নামক হাড়, নিচে টিবিয়া ও সামনে পেটেলা নামক হাড় এর মাধ্যমে এই সন্ধি গঠিত। এটার দুপাশে লিগামেন্ট নামক মাংস দ্বারা গঠিত রগ উপরের হারে সাথে নিচের হাড়ের সংযোগ সাধরন করে। সামনে কোয়াড্রিচেপচ নামক মাংস গুছ উরুর সামনে দিয়ে প্রবম্বিত হয়ে পেটেলা নামক অস্থির সাথে জোড়া লেগে
নিচের অস্থির সাথে জোড়া লেগে নিচের অস্থির সাথে সংযোগ স্থাপন করে, যাহা হাটুতে সাহায্য করে। জোড়ার ভিতর আঠালো এক প্রকার পদার্থ থাকে যাহা জোড়াকে নড়াচড়া করেত সহজ করে দেয়। অনেক ক্ষেত্রে এই তরল পদার্থ শুকিয়ে গেলেও এই রোগ দেখা দেয। হাটুর চার পাশে কয়েক
প্রকার স্নায়ু থাকার কারনে মস্তিঙ্ক এর ব্যথা অনুভব করে।
চিকিৎসাঃ- যেহেতু এ রোগের প্রধান কারণ ক্ষয়জনিত সমস্যা তাই এর প্রধান চিকিৎসা ফিজিওথেরাপি। অনেক ক্ষেত্রে ঔষধের পাশাপাশি
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অনেক ফলদায়ক। বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকগণ রোগ নির্ণয়ের পাশাপিশি বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তার মধ্যে শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি, আল্ট্রোসাউন্ড, অতিলোহিত রশ্মি, ও বিভিন্ন প্রকার ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এ সময় এমন কি সারা জীবন রোগিকে কিছু উপদেশ মানতে হয়।
যেমনঃ- ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রনে রাখা, শরীরের ওজন কমানো, উচু কমোড় বা পায়খানা ব্যবহার করা হাটু গেড়ে না বসা, নিয়মিত চিকিৎসকের নির্দেশিত ব্যায়াম করা।
অনেক ক্ষেত্রে শল্য চিকিৎসার প্রয়োজন হলে শল্য চিকিৎসার আগেও পরে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়।
ড. মোঃ সফিউল্যাহ্ প্রধান
পেইন প্যারালাইসিস ও রিহেব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ
যোগাযোগঃ-ডিপিআরসি হাসপাতাল( ২৯ প্রবাল হাউজিং,রিং-রোড,শ্যামলি,ঢাকা-১২০৭)
সিরিয়ালের জন্য ফোনঃ- +8801997702001; +8801997702002