Welcome to, Dhaka Pain Physiotherapy & Rehabilitation Center (DPRC) Ltd.

Opening Hours : Always Open
  Hotline : 09 666 77 44 11

All posts by shafiullah

প্যারালাইসিস এর কারণ, লক্ষণ ও আধুনিক চিকিৎসা






প্যারালাইসিস এর কারণ, লক্ষণ ও আধুনিক চিকিৎসা


প্যারালাইসিস এমন শারীরিক অসুখ, যে রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের দেহের কোনো অংশ বা সম্পূর্ণ দেহ অবশ হয়ে যায়। ফলে সেই শরীরের আক্রান্ত অংশের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এতে করে সেই অংশ অবশ হয় এবং নড়াচড়ায় অক্ষম হয়ে যায়। ঠিক কোন কোন কারণে এই রোগ হয়ে থাকে তা হয়তো অনেকেই জানেন না। এটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সেবা দিয়ে আসছে শ্যামলীর ঢাকা পেইন ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার (ডিপিআরসি)। এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ডিপিআরসির বাত-ব্যথা, প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান। তার পরামর্শ হুবহু তুলে ধরা হলো:

প্যারালাইসিস কথাটা শুনলে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আসলে যেকোনো সুস্থ মানুষও হঠাৎ প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে।

বাংলাদেশ বা সারা বিশ্বে প্যারালাইসিসের অন্যতম কারণ আমরা দেখেছি স্ট্রোক। আর এই স্ট্রোক হচ্ছে মস্তিষ্কের একটা রোগ যা থেকে প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।

এছাড়াও যদি কয়েকদিন যাবত কোমর ব্যথা, ঘাড় ব্যথা বা মাংসপেশির ব্যথা থাকে, কিন্তু যদি সঠিক ট্রিটমেন্ট করা না হয় তাহলে ধীরে ধীরে একদিন পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা প্যারালাইসিস হয়ে যেতে পারে।

প্যারালাইজড একসঙ্গে সব হাত-পা হবে এমনটা নয়। যেকোনো একটা হাত, একটা পা বা মুখে হতে পারে। আমরা প্রায় সময়ই বেলস পালসি বা মুখ বেঁকে যাওয়া দেখে থাকি।

এছাড়া একটা বাচ্চার জন্মের পরেও প্যারালাইসিস গ্রস্থ বা জন্মগত সমস্যা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে। আবার একজন সুস্থ ৫০ থেকে ৬০ বছরের মানুষও হঠাৎ করে প্যারালাইজড হতে পারে। এটাকেই আমরা বলছি স্ট্রোক।

তাছাড়া বিভিন্ন রোগ যেমন মোটর নিউরন ডিজিজ ও নার্ভের ডিজঅর্ডার অর্থাৎ স্নায়বিক ব্যাধি থেকে হওয়া প্যারালাইসিস কিন্তু একদিন হয় না এটি ধীরে হতে থাকে।

এছাড়া বিভিন্ন ভাইরাল ব্যাকটেরিয়া, চিকুনগুনিয়া, ডেঙ্গু জ্বর এবং করোনা পরবর্তী সময়ে আমরা প্রচুর প্যারালাইজড রোগী দেখতে পাচ্ছি।

প্যারালাইসিস হঠাৎ করেও হতে পারে আবার ধীরে ধীরেও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্য রোগ থেকেও প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হতে পারে। আবার বিভিন্ন ওষুধের প্রভাব থেকেও প্যারালাইসিস হতে পারে।

প্যারালাইসিস হলে করণীয়

হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়লে যদি কেউ হাত পা নাড়াতে না পাড়ে তাকে একটা নিরাপদ জায়গায় নিয়ে কাত করে শুইয়ে দিতে হবে। তাহলে যদি মুখ থেকে লালা পড়ে সেটা আর তার শ্বাসনালিতে যাবে না। এরপর যদি দেখা যায় এটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি, রোগী অজ্ঞান থাকে তাহলে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।

এসব ক্ষেত্রে রোগীদের প্রেসার, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। তাই সচেতনতা খুবই জরুরি। প্যারালাইসিস হয়ে গেলে প্রস্রাব-পায়খানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, সেজন্য ট্রেনিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। রোগীর হাইজিন, খাবার-দাবার, সবকিছু মেইনটেন করতে হবে।

অনেক সময় এসব রোগীর ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে আবার রিকারেন্ট স্ট্রোক হয়। তাই এসব সম্পর্কে শিক্ষা ও জনসচেতনতা দরকার।

প্যারালাইসিস হয়ে গেলে অ্যাডভান্স চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীকে নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। আমরা বাসায় রোগীদের ফেলে রাখব না।

আমরা চেষ্টা করব পুনর্বাসন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা নেওয়ার। এক্ষেত্রে আমরা ইলেক্ট্রো থেরাপি দিই, হসপিটালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিই এবং বিভিন্ন এক্সারসাইজ করাই। রিহ্যাবিলিটেশন টিমওয়ার্কের মাধ্যমে প্যারালাইসিস রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

DPRC paralysis treatment

বাত ব্যথা ও প্যারালাইসিসের সর্বাধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসায়

বাত-ব্যথা একটি অপ্রীতিকর অনুভূতি এবং মানসিক অভিজ্ঞতা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যথাকে একটি রোগের উপসর্গ হিসেবে ধরা হয়। একটা সময় ছিল, যখন মানুষ সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার অভাবে বাত-ব্যথা ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যেতো কিংবা পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করত। তবে, বিজ্ঞানের সবকটি শাখার উন্নতির ধারাবাহিকতায় থেমে নেই চিকিৎসা বিজ্ঞানও।

প্যারালাইসিস এর কারণ, লক্ষণ ও চিকিৎসা

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে শাখাটি উন্নয়নের অবদানে বাত-ব্যথা প্যরালাইসিস আক্রান্ত রোগীদের কমেছে মৃত্যু হার, মানুষ ফিরে পাচ্ছে স্বাভাবিক জীবন, ফিরে পাচ্ছে তার মুখের হাসি। দূর হয়েছে অভিশাপ নামের ভ্রান্ত ধারণা। সেই শাখাটির নাম:

“ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসা”

স্বাস্থ্যের ৪ টি অঙ্গ:

  1. প্রতিরোধ
  2. প্রতিকার
  3. আরোগ্য
  4. পুনর্বাসন

রোগীদের অভিজ্ঞতা

কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার জাহানারা বেগম ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রেন স্ট্রোক করে বাম পাশে প্যারালাইসিস হন। কুমিল্লায় থেরাপি নেওয়ার পরও উন্নতি হয়নি। এরপর ডিপিআরসিতে এসে সঠিক চিকিৎসায় উন্নতি হয়। বিস্তারিত ভিডিও:

সঞ্জয় চৌধুরী, ফেনী জেলার রোগী, ২০২৩ সালের জুনে GBS আক্রান্ত হন। প্রথমে প্লাজমা থেরাপি ও পরে বাসায় ছয় মাস ফিজিওথেরাপি নিয়েও ব্যালেন্স পেতেন না। ডিপিআরসিতে চিকিৎসার পর উন্নতি হয়। বিস্তারিত ভিডিও:

জরিনা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া — স্ট্রোকজনিত প্যারালাইসিস রোগী হিসেবে ডিপিআরসিতে চিকিৎসা নিয়ে উন্নতি লাভ করেছেন। আরও রোগীর ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

জরিনা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রোগী স্ট্রোকজনিত প্যারালাইসিসের কারণে আমাদের এখানে এসে ভর্তি হয়েছিলেন। তার ট্রিটমেন্টের বিষয়টা সম্পর্কে জানতে পারবেন নিচের ভিডিও থেকে:

SPAOA রোগে প্রায় প্যারালাইসিস এবং পঙ্গু রোগী হাসপাতালে কেমন চিকিৎসা নেন, সে বিষয়ে জানতে এই ভিডিও দেখতে পারেন:

ডিপিআরসি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও বাত ব্যথা প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ ডা. মো. সফিউল্যাহ্ প্রধান বলেন, ‘এখন অনেকেই বিদেশ থেকে এসে ডিপিআরসিতে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ রোগী বিনা অপারেশনে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে—আমরা এই নিশ্চয়তা দিচ্ছি। যারা এখনও বিদেশে চিকিৎসার কথা ভাবছেন তাদের বলব, বিদেশ যাওয়ার আগে অন্তত একবার ডিপিআরসিতে আসুন।’


Read More
plid treatment

PLID বা Disc Prolapse কীভাবে বুঝবেন | লক্ষণ ও চিকিৎসা










PLID বা Disc Prolapse কীভাবে বুঝবেন | লক্ষণ ও চিকিৎসা


📊 গবেষণার তথ্য:
বর্তমানে বাংলাদেশে ডিস্ক প্রলাপ্স রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি মূলত মেরুদণ্ডের দুই কশেরুকার মাঝখানের কার্টিলেজ জাতীয় ডিস্ক এর সমস্যা। ডিস্কের ভিতরের অংশ “নিউক্লিয়াস পালপোসাস” জেলির মতো নরম, আর বাইরের অংশ “অ্যানুলাস ফাইব্রোসাস” শক্ত। আঘাত, ভুলভাবে ভারি জিনিস তোলা, মেরুদণ্ডে চাপ পড়া ইত্যাদি কারণে এই ডিস্ক বের হয়ে নার্ভে চাপ সৃষ্টি করে।

🎯 সাধারণত দেখা যায়:
লাম্বার: L4/L5, L5/S1
সারভাইকেল: C4/C5, C5/C6

PLID Illustration

🔍 লক্ষণসমূহ:

  • কোমর ব্যথা, যা পায়ে ছড়ায়
  • পায়ে অবশভাব বা ঝিনঝিন ভাব
  • হাঁটার সময় পায়ে দুর্বলতা
  • দাঁড়িয়ে থাকলে বা হাঁটলে ব্যথা বেড়ে যায়
  • প্রস্রাব বা পায়খানা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা
  • পায়ের মাংসপেশি শুকিয়ে যাওয়া
  • পা প্যারালাইসিস পর্যন্ত হতে পারে

✅ চিকিৎসা:

গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ ডিস্ক প্রলাপ্স রোগী অপারেশন ছাড়াই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ ক্ষেত্রে আধুনিক অ্যাডভান্স ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন ট্রিটমেন্ট বেশ কার্যকর।

🔒 এতে করে অপারেশনের ঝুঁকি এড়িয়ে চিকিৎসা সম্ভব হয়। তবে রোগীকে ২-৪ সপ্তাহ হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। চিকিৎসাকালীন সময়ে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হয় এবং কোনো রকম অপ্রয়োজনীয় মুভমেন্ট একেবারেই নিষিদ্ধ।

💪 চিকিৎসা শেষে:

রোগীকে নির্দিষ্ট এক্সারসাইজ প্রতিদিন ২-৩ বার করে তিন মাস চালিয়ে যেতে হয় এবং পসচারাল এডুকেশন মেনে চলতে হয়।

🎥 ভিডিও দেখুন:

ডিস্ক প্রলাপ্স প্রতিরোধের উপায় কী?

পি এল আই ডি (PLID) রোগটি কী? ও চিকিৎসা

⚠ সতর্কতা:

  • সম্পূর্ণ বিশ্রাম নিতে হবে।
  • দৈনন্দিন কাজকর্ম ও চলাফেরা বন্ধ রাখতে হবে।
  • ভারি জিনিস তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
  • সাধারণ ব্যায়ামও বন্ধ রাখতে হবে।
  • নরম খাবার গ্রহণ করতে হবে, যাতে কোষ্ঠকাঠিন্য না হয়।
  • প্রচুর পানি পান করতে হবে।

✍️ ডাঃ মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান
বাত ব্যথা, প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব ফিজিও বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস), বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ (এক্স)
কনসালটেন্ট (ডিপিআরসি)


Read More
হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয়

হিটস্ট্রোক: লক্ষণ, ঝুঁকি ও করণীয় | DPRC স্বাস্থ্য পরামর্শ






হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় | গরমে সতর্ক থাকার পরামর্শ | Medical BD




হিটস্ট্রোকের লক্ষন ও করনীয়

বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে মানুষের শরীরও গরম হয়ে যায়। এর ফলে রক্তনালীগুলো খুলে যায়। এর জের ধরে রক্ত চাপ কমে যায় যে কারণে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালন করা হৃদপিণ্ডের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে। এসব কারণে মৃদু কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে যার মধ্যে রয়েছে ত্বকে ফুসকুড়ি পড়া, চুলকানি এবং পা ফুলে যাওয়া যা রক্তনালী উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

এছাড়াও প্রচুর ঘাম হওয়ার কারণে শরীরে তরল পদার্থ ও লবণের পরিমাণ কমে যায়, গুরুতর ক্ষেত্রে দেহে এ-দুটো জিনিসের মধ্যে যে ভারসাম্য আছে তাতেও পরিবর্তন ঘটে।

এসব কিছু একসাথে মিলিয়ে গরমে শরীর পরিশ্রান্ত হয়ে যেতে পারে এবং তার লক্ষণগুলো হচ্ছে:

  • মাথা চক্কর দেওয়া
  • বিবমিষা বা বমি বমি ভাব
  • নিস্তেজ হয়ে পড়া
  • মূর্ছা যাওয়া
  • কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়া
  • পেশি সংকুচিত হওয়া
  • মাথা ব্যথা
  • প্রচণ্ড ঘাম হওয়া
  • ক্লান্তি

আর রক্তচাপ খুব বেশি কমে গেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোকে কারা আক্রান্ত হতে পারে?

  • শ্রমিক
  • ক্রীড়াবিদ
  • শিশু
  • বয়োবৃদ্ধ
  • প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
  • যাদের ওজন বেশি
  • যারা শারীরিক ভাবে দুর্বল বা অসুস্থ বা যাদের উচ্চরক্তচাপ আছে।

করনীয়

  • কারা নিজেদের ঠান্ডা রাখতে হিমশিম খাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখুন, বিশেষ করে বয়স্ক লোকজন যাদের নানা ধরনের স্বাস্থ্য-জনিত সমস্যা রয়েছে এবং যারা একা থাকেন।
  • ঘরের ভেতরে অবস্থান করুন। যেসব জানালা সূর্যের দিকে মুখে করে আছে সেগুলোর পর্দা টেনে দিন।
  • প্রচুর পানীয় পান করুন।
  • কাউকে বিশেষ করে শিশুদেরকে কোনো ঘরে বা গাড়িতে একা রেখে যাবেন না।
  • বেলা ১১টা থেকে দুপুর তিনটা পর্যন্ত নিজেকে সূর্যের আলো থেকে দূরে রাখুন। এই সময়ে সূর্যের রশ্মি সবচেয়ে তীব্র হয়।
  • ছায়ার মধ্যে আশ্রয় নিন। সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
  • মাথায় লম্বা বারান্দা-ওয়ালা টুপি পরুন।
  • দিনের সবচেয়ে গরম সময়ে শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করা পরিহার করুন।
  • কোথাও গেলে সঙ্গে করে পানি নিয়ে যাবেন।
  • কোথাও পুকুর বা খাল বিল দেখলেই নিজেকে ঠান্ডা করার জন্য সেখানে নেমে পড়বেন না, কারণে তাতে আরো অনেক বেশি বিপদ হতে পারে যা হয়তো আপাতত চোখে পড়ছে না।
  • রাতের ঘুমানোর সময় ঠান্ডা মোজা পরতে পারেন, এবং অন্যান্য দিন আপনি যে সময়ে ঘুমান ওই একই সময়ে বিছানায় যাবেন।

✍️ ডাঃ মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান
বাত ব্যথা প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব ফিজিও বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস), বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ (এক্স),
কনসালটেন্ট (ডিপিআরসি)


Read More

অস্টিওপোরোসিস কী ধরনের রোগ






অস্টিওপোরোসিস

ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত একটা রোগ অস্টিওপোরোসিস। অস্থির বৃদ্ধির জন্য চাই ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের এ রোগটা হয়ে থাকে। যেসব বয়স্ক পুরুষ বহুদিন যাবৎ স্টেরয়েড ওষুধ সেবন করেন তাদের এবং মহিলাদের মেনোপজ হওয়ার পর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তা ছাড়া যারা অলস জীবনযাপন করে, পরিশ্রম কম করে তাদের এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর যারা অনেক দিন ধরে আর্থ্রাইটিসে ভোগে তাদেরও এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অস্টিওপোরোসিস এমন একটি রোগ যেখানে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং হাড় ভাঙার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বয়স্ক মানুষের মধ্যে হাড় ভাঙার সবচেয়ে সাধারণ কারণ এটি। যে হাড় সাধারণত বেশি ভাঙে, তা হলো মেরুদণ্ডের মধ্যে কশেরুকার হাড়, হাতের হাড়, এবং কোমরের হাড়। হাড় না ভাঙা পর্যন্ত সাধারণত কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। হাড় এতটাই দুর্বল হয়ে যেতে পারে যে, সামান্য জোর দিলে বা এমনিই ভেঙে যায়। হাড় ভাঙলে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হতে পারে এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। স্বাভাবিক সর্বোচ্চ হাড়ের ভরের তুলনায় কম ভর, এবং স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হাড়ের ক্ষয়ের কারণে অস্টিওপোরোসিস হতে পারে। রজর্নিবৃত্তির পর ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার জন্য হাড়ের ক্ষয় বৃদ্ধি পায়। নানা রকম অসুখ ও চিকিৎসা, যথা মদকাসক্তি, ক্ষুধাহীনতা, থাইরয়েড গ্রন্থির অতি সক্রিয়তা, কিডনি রোগ এবং অস্ত্রোপচার করে ডিম্বাশয় অপসারণের কারণেও অস্টিওপোরোসিস হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধ, যেমন, খিঁচুনি নিবারক ওষুধ, কর্কট রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু মিশ্র রাসায়নিক ওষুধ, পাকস্থলির অম্ল নিবারক মিশ্র, অতিরিক্ত বিষণ্নতা কাটানোর ওষুধ এবং নিজ শরীরের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আক্রমণকারী অস্বাভাবিক কিছু অসুখের ওষুধ হাড়ের ক্ষয়ের হার বৃদ্ধি করে। ধূমপান এবং খুব কম শারীরিক পরিশ্রমও ক্ষতির কারণ। তাই এসব বিষয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।

লেখক: ড. মো. সফিউল্যাহ প্রধান
ফিজিওথেরাপি, ডিজএবিলিটিস ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট, ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা।


Read More

পায়ের পাতা ও গোড়ালি ব্যথায় করণীয় | ডিপিআরসি









পায়ের পাতা ও গোড়ালি ব্যথায় করণীয় | ডিপিআরসি

পায়ের পাতা ও গোড়ালি ব্যথায় করণীয়

লেখক: মো. সফিউল্যাহ প্রধান, রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট, সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস), ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা।

পায়ের ব্যথার গুরুত্ব

মানবদেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যার পা নেই সেই বুঝে পায়ের মর্মকথা। আর যাদের পা থেকেও সঠিকভাবে হাঁটা চলাফেরা করতে পারছেন না তাদের জীবন হয়ে উঠছে দুর্বিষহ।

পায়ের গোড়ালির ব্যথা এখন কমন রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে হাঁটাচলার সময় প্রায়ই ব্যথা অনুভব করেন।


ব্যথার কারণ

  1. প্লান্টার ফ্যাসাইটিস
  2. রিট্রোক্যালকেনিয়াল স্পার
  3. টারসাল টানেল সিনড্রোম
  4. আঘাত জনিত কারণ
  5. অস্বাভাবিক পায়ের আকৃতি
  6. অতিরিক্ত ওজন
  7. মধ্য/পার্শ্বিক নার্ভ বাধাপ্রাপ্ত হওয়া
  8. দীর্ঘদিন দাঁড়িয়ে কাজ করা
  9. দীর্ঘদিন হাই হিল বা শক্ত সোলের জুতা ব্যবহার করা
  10. ফ্ল্যাট ফুট
  11. টিউমার এবং সিস্ট
  12. কখনো কখনো ইউরিক অ্যাসিড বাড়তি থাকার কারণেও গোড়ালি ব্যথা হতে পারে।

লক্ষণ

  • পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হবে। সাধারণত হাঁটলে সেটা আরও বেড়ে যায়।
  • গোড়ালি কখনো কখনো ফুলে যেতে পারে।
  • খালি পায়ে শক্ত জায়গায় হাঁটলে সাধারণত ব্যথা বেশি বাড়ে।
  • পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সকালে বেশি থাকে এবং তা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটু কমে আসে।
  • অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসার পর পা ফেলতে কষ্ট হয়।
  • কখনো কখনো গোড়ালি শক্ত মনে হয়।
  • আক্রান্ত স্থান লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে ও গরম অনুভব হয়।
  • পায়ের পাতা একটু অবশ বা প্যারালাইসিস ভাব হয়।

রোগ নির্ণয়

রোগ নির্ণয় জরুরি, চিকিৎসার প্রথম শর্ত সঠিক রোগ নির্ণয়।

  • রক্ত পরীক্ষা
  • এক্স-রে
  • এমআরআই
  • হাড়ের স্ক্যান

চিকিৎসা

  1. জীবনধারা পরিবর্তন।
  2. খালি পায়ে হাঁটা নিষেধ।
  3. সঠিক মাপের জুতা পরিধান করা, নরম সোল ব্যবহার করা, হিল কুশন, হিল প্যাড, ইনসোল ফুট ব্যবহার, আর্চ সাপোর্ট দেওয়া।
  4. শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলা।
  5. চিকিৎসকের নির্দেশমতো পায়ের ব্যায়াম নিয়মিত করা।
  6. কুসুম গরম পানিতে দুই বেলা পা ডুবিয়ে রাখা।
  7. নতুন ব্যথায় ঠান্ডা সেক কার্যকরী।
  8. গোড়ালি ব্যথায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত কার্যকরী ও নিরাপদ চিকিৎসা।

সচেতন হয়ে প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসা নিন। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের শরণাপন্ন হন।

ডিপিআরসি শ্যামলী, ঢাকা


Read More
অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস: একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস এমন একটি রোগ যা হাড়ের স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে রক্ত সরবরাহ বন্ধের ফলে হয়।
রক্ত সরবরাহ বন্ধ হলে হাড়ের টিস্যু মারা যায় এবং হাড় ভেঙে যায়। যখন কোনো জয়েন্ট, যেমন হিপ জয়েন্টের
কাছাকাছি হয়, তখন জয়েন্টের পৃষ্ঠটি ভেঙে যেতে পারে। এ অবস্থা যে কোনো হাড়ে হতে পারে, তবে সাধারণত এটি
লম্বা হাড়ের শেষ মাথায় ঘটে। এটি একটি হাড়, একই সময়ে অনেক হাড় অথবা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন হাড়কে ক্ষয়গ্রস্ত
করতে পারে।

কোথায় কোথায় নেক্রোসিস হতে পারে

  • গোড়ালি
  • চোয়ালে
  • হাঁটুতে
  • হাতের হিউমেরাস ও কাঁধের জয়েন্টে
  • পায়ের ফিমার ও হিপ জয়েন্টে

অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের কারণ

  • কোনো কারণে জয়েন্টে আঘাত পেলে
  • জয়েন্ট ভেঙে গেলে
  • কোনো কারণে রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হলে
  • দীর্ঘদিন ধরে কর্টিকোস্টেরয়েড ওষুধ সেবন করলে
  • দীর্ঘদিন ধরে মদ্যপান করলে
  • ডায়াবেটিস বা দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হলে
  • রক্তের রোগ (যেমন: সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, লিউকেমিয়া)
  • র‌্যাডিয়েশনের বা কেমোথেরাপির কারণে
  • এইচআইভি/এইডস রোগের জন্য
  • অটো ইমিউন রোগের জন্য
  • হাইপার লিপিডেমিয়া বা হাইপার কোয়াগুলেবেল অবস্থায় থাকলে
  • প্যানক্রিয়াটাইটিস, গাউচার রোগ, সিস্টেমেটিক লুপাস ইরাইথিম্যাটাস
  • কোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করলে
  • জয়েন্ট ডিসলোকেশন

রোগের লক্ষণ

  • হাঁটাচলা করার সময় ব্যথা লাগা
  • পায়ে টান লাগা
  • সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় ব্যথা অনুভব করা
  • দাঁড়ানোর সময় ব্যথা অনুভব করা
  • হাঁটু ভেঙে বসতে না পারা
  • আক্রান্ত অঙ্গ ছোট হয়ে যাওয়া
  • কুঁচকিতে, ঊরুতে, নিতম্বে ব্যথা হওয়া
  • বিশ্রাম নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভব হওয়া
  • ক্রস পায়ে বসতে না পারা

রোগ নির্ণয়

  • এক্স-রে
  • এমআরআই
  • সিটি স্ক্যান
  • হাড়ের স্ক্যান
  • বায়োপসি
  • হাড়ের কার্যকারিতা পরীক্ষা

চিকিৎসা

নন-সার্জিক্যাল চিকিৎসা

  • আক্রান্ত স্থানে ঠান্ডা বা গরম সেঁক
  • কিছু নন-স্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ওষুধ
  • ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
  • পুনর্বাসন এবং বিশ্রাম

সার্জিক্যাল চিকিৎসা

  • কোর ডিকম্প্রেশন (Core Decompression)
  • হাড় গ্র্যাফটিং (Bone Grafting)
  • অস্টিওটমি (Osteotomy)
  • সম্পূর্ণ হিপ জয়েন্ট প্রতিস্থাপন (Total Hip Joint Replacement)

জটিলতা

চিকিৎসা করা না হলে এই রোগ ধীরে ধীরে খারাপ রূপ ধারণ করে। অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিসের ফলে
হাড়ের মসৃণ আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়, ফলে আর্থ্রাইটিস হতে পারে। ব্যথা বা অন্য কোনো লক্ষণ প্রকাশ
পেলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান

সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালট্যান্ট

ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা

Read More
পায়ের পাতা ব্যথার কারণ ও সমাধান

পায়ের পাতা ব্যথার কারণ ও সমাধান









পায়ের পাতা ব্যথার কারণ ও সমাধান

পা মানবশরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যার পা নেই, সেই বুঝে পায়ের মর্মকথা। আর যাদের পা থেকেও সঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না, তাদের জীবন হয়ে উঠছে দুর্বিষহ।

সেলিম রহমান একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। দীর্ঘদিন কোমরব্যথায় ভুগছিলেন। নিয়মিত চিকিৎসা ও চিকিৎসকের নির্দেশমতো ব্যায়াম করে ভালোই ছিলেন। কিন্তু ইদানীং ঘুম থেকে উঠে ফ্লোরে পা রাখতেই পায়ের তলায় তীব্র ব্যথা হয়। আবার অনেকক্ষণ চেয়ারে বসে থাকার পর উঠে দাঁড়াতেই পায়ের তলায় তীব্র ব্যথা হয়। একটু হাঁটাহাঁটি করলে ব্যথা কিছুটা কমে আসে।

সেলিম রহমান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে জানতে পারলেন তার প্লান্টার ফ্যাসাইটিস হয়েছে।

মানবদেহে পায়ের গোড়ালিতে যেসব কারণে ব্যথা হয় তার মধ্যে প্লান্টার ফ্যাসাইটিসই অন্যতম। দীর্ঘদিন এই সমস্যা চলতে থাকলে পায়ের তলায় স্পার বা কাঁটার মতো হাড় বৃদ্ধি পায়। এটাকে ডাক্তারি ভাষায় ক্যালকেনিয়াল স্পার বলা হয়।

পায়ের গোড়ালিতে ব্যথার অন্যান্য কারণ

  • পায়ের হাড় ভেঙে গেলে
  • গেটেবাত
  • ওস্টিওমাইলাইটিস
  • স্পন্ডাইলো আথোপ্যাথি
  • বার্সাইটিস
  • টেনডিনাইটিস
  • রিট্রোক্যালকেনিয়াল স্পার
  • স্পোর্টস ইনজুরি
  • হেমার টো
  • মটনস নিউরোমা
  • নার্ভের প্রদাহ
  • ডায়াবেটিস
  • কেলুলেসতার কারণে পায়ের গঠনগত ভুল

ব্যথা বাড়ার লক্ষণ

  • পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হবে। সাধারণত হাঁটলে সেটা আরও বেড়ে যায়।
  • গোড়ালি কখনো কখনো ফুলে যেতে পারে।
  • খালি পায়ে শক্ত জায়গায় হাঁটলে ব্যথা বেশি হয়।
  • পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা সকালে বেশি থাকে এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে।
  • অনেকক্ষণ এক জায়গায় বসার পর উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হয়।
  • কখনো কখনো গোড়ালি শক্ত মনে হয়।
  • আক্রান্ত স্থান লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে ও গরম অনুভূত হয়।
  • পায়ের পাতা একট অবশ বা প্যারালাইসিসের ভাব হয়।

পায়ের পাতা ব্যথার কারণ ও সমাধান

এর চিকিৎসা

রোগ নির্ণয় সঠিক চিকিৎসার প্রথম শর্ত। তাই অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

প্রাথমিক চিকিৎসা

  • বিশ্রাম
  • ঠান্ডা সেক
  • কম্প্রেশন
  • পা উঁচু করে রাখা

অন্যান্য চিকিৎসা

  • নির্দিষ্ট ওষুধ এবং সাপ্লিমেন্ট
  • নরম সোলের জুতা ব্যবহার
  • হিল কুশন এবং আর্চ সাপোর্ট
  • গোড়ালির কাছে ছিদ্রযুক্ত জুতা
  • ক্যালকেনিয়াল স্পার থাকলে অপারেশন না করা

ব্যায়াম

চিকিৎসকের নির্দেশমতো পায়ের ব্যায়াম নিয়মিত করুন।

ঘরোয়া সমাধান

প্রতিদিন ১০ মিনিট কুসুম গরম পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন।

লেখক: ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ

ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা


Read More
হাঁটু ক্ষয় রোগের চিকিৎসা ও করণীয়

হাঁটু ক্ষয় রোগের চিকিৎসা ও করণীয়







জীবনের কোনো না কোনো সময় হাঁটু ব্যথা সবাইকেই ভোগায়। বিশেষ করে যাদের বয়স চল্লিশের ওপর তারা হাঁটু ব্যথায় বেশি ভোগেন। এতে হাঁটা-চলাসহ দৈনন্দিন কাজগুলো করাও কঠিন হয়ে যায়। তবে ঠিক কোন কারণগুলোর জন্য এই হাঁটুব্যথা হয়, সে বিষয়ে অনেকেই জানেন না। তাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে রইল কিছু পরামর্শ- অনেক রোগীর ক্ষেত্রে হাঁটু ফুলে যাওয়া বা বেঁকে যাওয়াও দেখা যায়। হাঁটুকে চিকিৎসার ভাষায় ‘জেনু’ বলা হয়। কিছুক্ষেত্রে হাঁটুতে এমন জেনু ভেরাস বা জেনু ডিফর্মিটি দেখা দিতো পারে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে হাঁটুব্যথা থেকে কোমর ব্যথাও দেখা দিতে পারে। হাঁটুর গঠন হয়েছে মূলত তিনটি অংশ মিলে। উপরেরটি হচ্ছে ফিমার, নিচেরটি টিবিয়া এবং সামনের অংশের নাম প্যাটেলা। হাঁটুর ভেতরের পানিকে বলা হয় সাইনোভিয়াল ফ্লুইড। আমাদের যে কারণে হাঁটুর অপারেশন প্রয়োজন হয় বা রোগী বাধ্য হয় সেটার মূল কারণ হচ্ছে আমাদের মাঝে হাঁটুর সমস্যা নিয়ে জনসচেতনতা তেমন নেই। হাঁটুব্যথা যে কারণেই হোক না কেন, রোগী যদি ব্যথার শুরুতেই চিকিৎসা শুরু করেন তাহলে অধিকাংশ সময় অপারেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে হাঁটুব্যথার ক্ষেত্রে আমাদের দেশের মানুষ কিছু ভুল করে থাকে। যেমন ব্যথা হলেই চেয়ারে বসে কাজ করা, হাঁটা চলা কমিয়ে দেওয়া, সিঁড়ি ওঠানামা না করা ইত্যাদি। এগুলো আসলে ভ্রান্ত ধারণা।

“যদি ব্যথার শুরুতেই চিকিৎসা শুরু করা যায়, অধিকাংশ সময় অপারেশনের প্রয়োজন হয় না।”

মানুষ হচ্ছে মুভমেন্ট করা প্রাণী। হাঁটা চলাফেরা এগুলো আমাদের করতে হয়। এজন্য দরকার আমাদের জনসচেতনতা। হাঁটুর ব্যথা ট্রিটমেন্ট না করলে রোগীর ভিতরে ইনফেকশন হয় পরে প্রদাহ হতে হতে হাঁটু জোড়া ক্ষয় হয়। দেখা যায় অনেক সময় জনগণের পক্ষে এই সমস্যা কারণে পা বেঁকে যেতে পারে। অনেক হাঁটুর সামনে যে মাসেল এবং লিগামেন্ট থাকে দুর্বল হয়ে পড়ে একপর্যায়ে শক্তি হারিয়ে ফেলে হাঁটু। ব্যথা হলে আমাদের যেটা করতে হবে যে এটার সঠিক চিকিৎসা করতে হবে। বিভিন্ন এক্সারসাইজ করতে হবে। তাহলে অনেক ক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হবে না। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন হয়, বিভিন্ন ইলেকট্রো ফিজিক্যাল ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন হতে পারে। অন্যদিকে পিআরপি থেরাপি, বিভিন্ন ইলেকট্রো চিকিৎসা এগুলো আধুনিক চিকিৎসার অংশ। যে কারণে হাঁটুর সমস্যাটা হলো সেটা যদি আমরা প্রিভেনশন করতে পারি তাহলে কিন্তু হাঁটুর অপারেশনের প্রয়োজন পরবে না। কেন হাঁটুর সমস্যাটা হলো তা স্পেসিফিক ডায়াগনোসিস করে বের করতে হবে। ব্যথা হলে, হাঁটু ফুলে গেলে সঙ্গে সঙ্গে অপারেশন করা যাবে না। অনেক সময় অপারেশন করতে হতে পারে যদি সিবিআর আর্থাইটিস হয়। এ ছাড়া একেবারে ডিজেবল এবং রোগীর বয়স, পেশা এগুলো সব সমন্বয় করে অপারেশনের প্রয়োজন- তখন হয়তো অপারেশনের প্রয়োজন হবে। তাই এ বিষয়ে সচেতন ও যত্নবান হতে হবে।

লেখক: মো. সফিউল্যাহ প্রধান
ফিজিওথেরাপি ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিস্ট, ডিপিআরসি, শ্যামলী, ঢাকা।


Read More
কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার

কেউ যদি বলে কোমর ব্যথার কথা শোনেননি, তাহলে তো অবাক হওয়ারই বিষয়। বেশিরভাগ মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময় কোমর ব্যথাজনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন। আমাদের দেশে প্রতি পাঁচ জনের মধ্যে চারজন জীবনের কোনো না কোনো সময়ে এই সমস্যায় ভুগেন। আগে মানুষের ধারণা ছিল কোমর ব্যথা শুধু বয়স্কদের হয়, কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে কোমর ব্যথা যেকোনো বয়সেই হতে পারে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি, কর্পোরেট পেশা, নগরায়ন, শরীর চর্চার
অভাব, জীবিকার তাগিদে অত্যধিক পরিশ্রম, শ্রমিক পেশাজীবী, কম্পিউটিং, চলাফেরা-শোয়া-বসায় ভুল অবস্থান, শারীরিক দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে কোমর ব্যথার রোগী দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। উঠতি বয়সী শিশু থেকে বৃদ্ধ ও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যে কারো কোমর ব্যথা হতে পারে। অনেকের এমনিতেই সেরে যায়, অনেকের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়, আবার অনেকে কোমর ব্যথা নিয়েই মৃত্যুবরণ করে।

কোমর ব্যথার কারণ:

কোমর ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে ৯০ ভাগ হচ্ছে ‘মেকানিক্যাল সমস্যা’। মেকানিক্যাল সমস্যা বলতে মেরুদণ্ডের মাংসপেশি, লিগামেন্ট মচকানো, আংশিক ছিঁড়ে যাওয়া, দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক সমস্যা, কশেরুকার অবস্থানের পরিবর্তন ও মেরুদণ্ডের নির্দিষ্ট বক্রতার পরিবর্তনকে বোঝায়। চলাফেরা, জীবিকার ধরন, খুব বেশি ভার বা ওজন বহন, মেরুদণ্ডের অতিরিক্ত নড়াচড়া, একটানা বসে বা দাঁড়িয়ে কোনো কাজ করা, মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়া সর্বোপরি কোমরের অবস্থানগত ভুলের জন্য হয়ে থাকে।

“বার্থ্যক্য জনিত বয়সে কোমর ব্যথার প্রধান কারন হচ্ছে কোমরের হাড় ও ইনটারভাটিক্যাল ডিস্ক এর ক্ষয় এবং কোমরের মাংশ পেশীর দুর্বলতা। কোমর ব্যথার রেশগুলোকে আমরা, লো-বাক পেইন/লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস। প্রোলাপস ডিস্ক ইত্যাদি রোগ বলে থাকি। এই রোগের কারণ, প্রক্রিয়া ও চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রায় ঘাড় ব্যথা বা সারভাইক্যাল স্পন্ডাইলোসিস এর অনুরূপ। তবে রোগীর শরীরের অবস্থান/ সোল্ডার সঠিকভাবে রক্ষার গুরুত্ব দিলে অনেক ক্ষেত্রে কোমরের ব্যথা এড়ানো সম্ভব। ”

অন্যান্য কারণের মধ্যে বয়সজনিত মেরুদণ্ডের ক্ষয় বা বৃদ্ধি, অস্টিওঅ্যাথ্রাইটিস বা গেঁটে বাত, অস্টিওপোরোসিস, এনকাইলজিং স্পনডাইলোসিস, মেরুদণ্ডের স্নায়বিক সমস্যা, টিউমার, ক্যান্সার, বোন টিবি, কোমরের মাংসপেশির সমস্যা, পেটের বিভিন্ন ভিসেরার রোগ বা ইনফেকশন, বিভিন্ন স্ত্রীরোগজনিত সমস্যা, মেরুদণ্ডের রক্তবাহী নালির সমস্যা, অপুষ্টিজনিত সমস্যা, মেদ বা ভুঁড়ি, অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি।

উপসর্গ:

কোমরের ব্যথা আস্তে আস্তে বাড়তে পারে বা হঠাৎ প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। নড়াচড়া বা কাজকর্মে ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে। ব্যথা কোমরে থাকতে পারে বা কোমর থেকে পায়ের দিকে নামতে পারে অথবা পা থেকে কোমর পর্যন্ত উঠতে পারে। অনেক সময় কোমর থেকে ব্যথা মেরুদণ্ডের পেছনের দিকে দিয়ে মাথা পর্যন্ত উঠতে পারে। রোগী অনেকক্ষণ বসতে বা দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। ব্যথার সঙ্গে পায়ে শিন শিন বা ঝিন ঝিন জাতীয় ব্যথা নামতে বা উঠতে পারে। হাঁটতে গেলে পা খিঁচে আসে বা আটকে যেতে পারে, ব্যথা দুই পায়ে বা যে কোনো এক পায়ে নামতে পারে। অনেক সময় বিছানায় শুয়ে থাকলে ব্যথা কিছুটা কমে আসে। এভাবে দীর্ঘদিন চলতে থাকলে রোগীর কোমর ও পায়ের মাংসপেশির ক্ষমতা কমে আসে এবং শুকিয়ে যেতে পারে, সর্বোপরি রোগী চলাফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। যেহেতু আধুনিক এই যুগেও কোমর ব্যথা একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত স্বাস্থ্য সমস্যা; তাই এ সমস্যার সমাধানে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।

প্রতিকার

ফার্মাকোথেরাপি:
চিকিৎসকরা রোগীকে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সাধারণত ব্যথানাশক এনএসএআইডিএস গ্রুপের ওষুধ, মাসল রিলাক্সজেন ও সেডেটিভজজাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে থাকেন। অনেক সময় মেরুদণ্ডের ভেতর স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধও প্রয়োগ করে থাকেন

ফিজিওথেরাপি ও রিহেবঃ
কোমর ব্যথাজনিত সমস্যার অত্যাধুনিক চিকিৎসা হচ্ছে ফিজিওথেরাপি। এই চিকিৎসা ব্যবস্থায় চিকিৎসক রোগীকে ইলেকট্রোমডুলেটর ও বিভিন্ন ডাক্তারি ব্যায়াম দিয়ে থাকেন। তা ছাড়া চিকিৎসা চলা অবস্থায় কোমরে নির্দিষ্ট অর্থোসিস বা ব্রেস প্রয়োগ করে থাকেন।

সার্জারি:
যদি দীর্ঘদিন ফার্মাকোথেরাপি ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা চালানোর পরও রোগীর অবস্থার পরিবর্তন না হয় রোগীকে অবস্থা অনুযায়ী কোমর-মেরুদণ্ডের অপারেশন বা সার্জারির প্রয়োজন হয়। এ জাতীয় সার্জারি সাধারণত নিউরো, অর্থোসার্জন বা স্পাইন সার্জন করে থাকেন। সার্জারির পরে রিহেবঃ ফিজিও বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা নিতে হয়।

প্রতিরোধ

যেহেতু কোমর ব্যথা বার বার দেখা দিতে পারে বা যারা এখনও এ জাতীয় সমস্যায় ভোগেননি, তারা নিচের পরামর্শ মেনে চলতে পারেন।

পায়ের কাফ মাসল বা মাংসপেশির স্ট্রেচিং:

যদি দীর্ঘদিন ফার্মাকোথেরাপি ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা চালানোর পরও রোগীর অবস্থার পরিবর্তন না হয় রোগীকে অবস্থা অনুযায়ী কোমর-মেরুদণ্ডের অপারেশন বা সার্জারির প্রয়োজন হয়। এ জাতীয় সার্জারি সাধারণত নিউরো, অর্থোসার্জন বা স্পাইন সার্জন করে থাকেন। সার্জারির পরে রিহেবঃ ফিজিও বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা নিতে হয়।

 পায়ের কাফ মাসল বা মাংসপেশির স্ট্রেচিং:

পায়ের কাফ মাসল বা মাংসপেশির স্ট্রেচিং:

কোয়াড্রিসেপস বা উরুর সামনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং :

সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যে কোন এক হাঁটু ভাঁজ করে ওই পায়ের গোড়ালি নিতম্বের সঙ্গে লাগাতে চেষ্টা করুন। এতে উরুর সামনের মাংসপেশিতে টান পড়বে।

কোয়াড্রিসেপস বা উরুর সামনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং :

কোয়াড্রিসেপস বা উরুর সামনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং :

হ্যামস্ট্রিং বা উরুর পেছনের মাংসপেশি স্ট্রেচিং :

টুল বা বেঞ্চের ওপর এক পা সোজা করে রেখে পায়ের পাতা এক হাত দিয়ে নিজের দিকে টানতে হবে। এতে উরুর পেছনের মাংসপেশিতে টান লাগবে।

হ্যামস্ট্রিং বা উরুর পেছনের মাংসপেশি স্ট্রেচিং

হ্যামস্ট্রিং বা উরুর পেছনের মাংসপেশি স্ট্রেচিং

নিতম্ব বা হিপের সামনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং:

ডান হাঁটু ভাঁজ করে বসে বাম পায়ের পাতা সোজাভাবে ফ্লোরে রাখুন। এরপর সামনে ঝুঁকুন। একইভাবে অন্য পায়ের জন্য করুন। এতে নিতম্বের সামনের মাংসপেশি টান হবে

নিতম্ব বা হিপের সামনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং:

নিতম্ব বা হিপের সামনের মাংসপেশির স্ট্রেচিং:

ইলিওটিবিয়াল ব্যান্ড স্ট্রেচিং:

এক পায়ের সামনে অন্য পা ক্রস করে চাপ দিন। এতে ইলিওটিবিয়াল ব্যান্ডে টান পড়বে।

ইলিওটিবিয়াল ব্যান্ড স্ট্রেচিং:

ইলিওটিবিয়াল ব্যান্ড স্ট্রেচিং:

অবস্থাগত কোমর ব্যথা সায়াটিকা রোগ বা ডিস্ক প্রলেপস রোগের ব্যায়াম:

■ প্রথমে সতর্কতার সঙ্গে অবস্থাগত কোমর ব্যথা সায়াটিকা রোগ বা ডিস্ক উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার কনুইয়ের ওপর ভর করে বুক বা মাথা খুব ধীরে ধীরে উপরে উঠান। প্রতিবেলায় ছয় বার করুন।

■ উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এ অবস্থা থেকে দুই হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে মাথা ও বুক তুলুন, যেন তলপেট বিছানায় লাগানো থাকে। পাঁচ সেকেন্ড এভাবে থাকুন। ব্যায়ামটি ১০ বার করুন।

■ উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। হাত দুটি কোমরের পেছনে রাখুন। এ অবস্থায় নিচের দিকে তাকিয়ে ধীরে ধীরে মাথা ও বুক ওপরের দিকে ওঠান। পাঁচ সেকেন্ড রাখুন। আস্তে আস্তে নামান। দিনে দুই বেলা পাঁচ থেকে ১০ বার করুন।

■ উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। বুক বা মাথা মেঝের সঙ্গে লাগিয়ে রাখুন। এবার দুই হাত একসঙ্গে দু-তিন ইঞ্চি উঠিয়ে কয়েক সেকেন্ড রাখুন। এবার ডান হাত ও বাম পা একসঙ্গে উঠিয়ে কয়েক সেকেন্ড রাখুন, এবার নামিয়ে ফেলুন। একইভাবে বাম হাত ও ডান পা উঠিয়ে নামিয়ে ফেলুন।

কোমর ব্যথা সায়াটিকা রোগ বা ডিস্ক প্রলেপস রোগের ব্যায়াম

স্পন্ডালাইসিস, মাংসপেশি বা লিগামেন্টজনিত সমস্যা, স্নায়বিক সমস্যাজনিত ব্যায়াম:

■ চিৎ হয়ে শুয়ে হাত দুটো ভাঁজ করে বুকের ওপর রাখুন, হাঁটু দুটি দুটি ভাঁজ করুন। এবার আস্তে আস্তে মাথা, কাঁধ ও পিঠ ফ্লোর বা বিছানা থেকে ওপরে তুলুন, বেশি ওপরে তুলবেন না। (যাদের ঘাড়ে ব্যথা আছে তারাও ব্যায়ামটি করার সময়ে মাথার পেছনে হাত রাখুন)।

■ চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার ডান পা ভাঁজ করে বুকের কাছে নিয়ে আসুন, পা সোজা করে আস্তে আস্তে নামিয়ে ফেলুন। একইভাবে অন্য পায়ের জন্য করুন।

■ তৃতীয় ব্যায়ামটি আগের ব্যায়ামের মতো একটি ব্যায়াম। সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ধীরে ধীরে পেছনে ঝুঁকুন। এবার ধীরে ধীরে সোজা হন।

অ্যারোবিক ব্যায়াম: স্ট্রেচিং ব্যায়াম ও নির্দিষ্ট ব্যায়াম ছাড়াও মেরুদণ্ডের সুস্থতা ও কোমর ব্যথার জন্য প্রয়োজন অ্যারোবিক ব্যায়াম। যেমন-

  • সাঁতার কাটা
  • নিয়মিত হাঁটা
  • আস্তে আস্তে দৌড়ানো

দৈনন্দিন কাজে সতর্কতা

নিচ থেকে কিছু তোলার সময়:
■ কোমর ভাঁজ করে কিংবা ঝুঁকে তুলবেন না। হাঁটু ভাঁজ করে তুলুন।

কোন কিছু বহন করার সময়:
■ ঘাড়ের ওপর কিছু তুলবেন না।
■ ভারী জিনিস শরীরের কাছাকাছি রাখুন।
■ পিঠের ওপর ভারী কিছু বহন করার সময় সামনের দিকে ঝুঁকে বহন করুন।

দাঁড়িয়ে থাকার সময়:
■ ১০ মিনিটের বেশি দাঁড়িয়ে থাকবেন না। হাঁটু না-ভেঙে সামনের দিকে ঝুঁকবেন না।
■ দীর্ঘক্ষণ হাঁটতে বা দাঁড়াতে হলে উঁচু হিল পরবেন না।
■ অনেকক্ষণ দাঁড়াতে হলে কিছুক্ষণ পর পর শরীরের ভর এক পা থেকে অন্য পায়ে নিন।
■ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলে ছোট ফুট রেস্ট ব্যবহার করুন।

যানবাহনে চড়ার সময়:
■ গাড়ি চালানোর সময় স্টিয়ারিং হুইল থেকে দূরে সরে বসবেন না। সোজা হয়ে বসুন।
■ ভ্রমণে ব্যথার সময় লাম্বার করসেট ব্যবহার করুন।

বসে থাকার সময়:
■ চেয়ার টেবিল থেকে বেশি দূরে নেবেন না।
■ সামনে ঝুঁকে কাজ করবেন না।
■ কোমরের পেছনে সাপোর্ট দিন।
■ এমনভাবে বসুন যাতে উরু মাটির সমান্তরালে থাকে।
■ নরম গদি বা স্প্রিংযুক্ত সোফা বা চেয়ারে বসবেন না।

শোয়ার সময়:
■ উপুড় হয়ে শোবেন না। ভাঙা খাট, ফোম বা স্প্রিংয়ের খাটে শোবেন না। সমান তোষক ব্যবহার করুন।
বিছানা শক্ত, চওড়া ও সমান হতে হবে। শক্ত বিছানা বলতে সমান কিছুর ওপর পাতলা তোষক বিছানাকে বোঝায়।

মেয়েরা যেসব নিয়মকানুন মেনে চলবেন:
■ অল্প হিলের জুতা বা স্যান্ডেল পরুন, বিভিন্ন জুতার হিলের উচ্চতা বিভিন্ন না হওয়াই উচিত।
■ তরকারি কাটা, মশলা পেষা, কাপড় কাচা ও ঘর মোছার সময় মেরুদণ্ড সাধারণ অবস্থায় এবং কোমর সোজা রাখুন।
■ কোমর ঝুঁকে বাচ্চাকে কোলে নেবেন না। ঝাড় দেয়া, টিউবওয়েল চাপার সময় কোমর সোজা রাখবেন।
■ পানি ভরা কলস বা বালতি, ভারী আসবাবপত্র তুলতে প্রথমে হাঁটু ভাঁজ করে বসবেন এবং কোমর সোজা রাখবেন।
■ মার্কেটিং বা শপিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হলে ১০ থেকে ১৫ মিনিট দাঁড়ানো বা হাঁটার পরে বিশ্রামের জন্য একটু বসবেন।
■ বিছানা গোছানোর সময় কোমর ভাঁজ না-করে বরং হাঁটু ভেঙে বসা উচিত।

কোমর ব্যথা বেশি হলে বিছানা থেকে শোয়া ও ওঠার নিয়ম:
■ চিৎ হয়ে শুয়ে এক হাঁটু ভাঁজ করুন।
■ এবার অন্য হাঁটুটি ভাঁজ করুন। হাত দুটি বিছানায় রাখুন।
■ এবার ধীরে ধীরে এক পাশ কাত হোন।
■ পা দুটি বিছানা থেকে ঝুলিয়ে দিন, এবার কাত হওয়া দিকের হাতের কনুই এবং অপর হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে ধীরে ধীরে উঠে বসুন।
■ দুই হাতের ওপর ভর দিয়ে বসুন এবং মেঝেতে পা রাখুন।
■ এবার দুই handsের ওপর ভর দিয়ে সামনে ঝুঁকে দাঁড়ান।

ওজন কমান

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন:
গরু, খাসির মাংস, ডালজা ও মিষ্টি জাতীয় খাবার, তৈলাক্ত খাবার খাদ্য তালিকা থেকে কমিয়ে শাকসবজি, তরিতরকারি, ফলমূল খাদ্য তালিকায় বেশি করে রাখুন।
ফাস্টিং বা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং ওজন কমাতে গবেষণালব্ধ ফলাফল বহন করে।

ডা. মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান

বাত ব্যথা, প্যারালাইসিস ও রিহ্যাব ফিজিও বিশেষজ্ঞ
ডিপিআরসি হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক ল্যাব
১২/১ রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭
সিরিয়ালের জন্য ফোন: 09666-774411

Read More
বেলস পলসি: মুখ বেঁকে যাওয়ার কারণ, লক্ষণ ও দ্রুত কার্যকর চিকিৎসা

বেলস পলসি: মুখ বেঁকে যাওয়ার কারণ, লক্ষণ ও দ্রুত কার্যকর চিকিৎসা

“বেলস পলসি বা মুখ বেকে যাওয়া লজ্জা নয়, দ্রুত চিকিৎসা কি?”

রোজিনা (ছদ্ম নাম), বয়স ২০ বছর, পেশায় একজন গৃহিণী। একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মুখ ধোয়ার জন্য আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখলেন, তার এক চোখ বন্ধ হচ্ছে না, মুখে পানি নিলে তা গড়িয়ে পড়ছে, এবং গাল ফুলানো যাচ্ছে না। এই সমস্যার কারণ? এটি হতে পারে বেলস পলসি বা ফেসিয়াল প্যারালাইসিস। এটি কোনো রোগীর মুখের মাংসপেশীর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারানোর ফলাফল।

বেলস পলসি কী?

মানুষের মুখের মাংসপেশী একটি জটিল কাঠামো, যা ফেসিয়াল নার্ভ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ফেসিয়াল নার্ভের প্রদাহ বা আঘাতজনিত সমস্যার কারণে এই রোগ দেখা দিতে পারে। ফেসিয়াল প্যারালাইসিস বা বেলস পলসির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • ভাইরাস সংক্রমণ (যেমন হার্পিস, রুবেলা, মাম্পস)
  • ঠান্ডা লাগা বা আঘাতজনিত সমস্যা
  • মস্তিষ্কে স্ট্রোক
  • ফেসিয়াল টিউমার
  • ডায়াবেটিস বা শ্বাসযন্ত্রের রোগ

লক্ষণ:

  • চোখ বন্ধ করতে না পারা
  • কপাল কুচকাতে না পারা
  • ঠোঁট চেপে ধরা বা গাল ফুলাতে না পারা
  • মুখ একপাশে বেকে যাওয়া

চিকিৎসা:

ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন বেলস পলসির মূল চিকিৎসা। আক্রান্ত হলে নিউরো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ (যেমন স্টেরয়েড, ভিটামিন) সেবন এবং ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের অধীনে চিকিৎসা নেয়া জরুরি। ফিজিওথেরাপি পদ্ধতিতে ইলেক্ট্রিক নার্ভ স্টিমুলেশন, আল্ট্রাসাউন্ড থেরাপি, এবং বিভিন্ন ব্যায়াম রোগীদের জন্য উপকারী।

ব্যায়াম:

  • জোর করে চোখ বন্ধ করার চেষ্টা
  • শিস বাজানোর চেষ্টা
  • ঠোঁট চেপে ধরে গাল ফুলানো
  • কপাল কুচকানো
  • আক্রান্ত গালে আলতোভাবে ম্যাসাজ করা

চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি অতিরিক্ত ঠান্ডা এড়িয়ে চলা এবং বিশেষভাবে খাবার খাওয়ার সময় সতর্ক থাকা জরুরি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়মিত ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি গ্রহণে রোগীরা আরোগ্য লাভ করেন।

ডাঃ মোঃ সফিউল্যাহ প্রধান
পেইন, প্যারালাইসিস ও রিহেব-ফিজিও বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালটেন্ট (ডিপিআরসি)
১২/১ রিং রোড, শ্যামলী, ঢাকা।
ফোন: 09666774411

Read More